Some Important Website

বাংলা প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট সমুহ

Monday, September 12, 2016

৫০।যে কারণে মশা শুধু আপনাকেই কামড়ায় !

আমাদের আশেপাশে অনেকেই বসে আছে, কিন্তু মশাগুলো কেন শুধু আপনাকে কামড়াচ্ছে । কেন আপনি একাই শুধু ওদের লক্ষ্য আপনাকে রক্তশূন্যকরা! যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে যখন বললেন, তখন হয়তো আশপাশের কেউ হেসে বলে উঠল- ‘আরে, আপনার রক্ত মিষ্টি বলেই মশা খাচ্ছে ’কিন্তু জেনে নিন আসল কারণটা কী ?এই বিষয়ে দুবাইয়ের অ্যাস্টার মেডিক্যাল সেন্টারের ফিজিসিয়ান ড. এস রামকুমার জানালেন এর কারণ সম্পর্কে। তিনি জানান, মশার ঘ্রাণশক্তি খুব প্রখর। আর তাই এরা মানুষের গায়ের গন্ধ ভালোভাবে শুঁকতে পারে। তা সে সুগন্ধ হোক অথবা দুর্গন্ধ। গন্ধ শুঁকেই শিকার পছন্দ করে মশা।
‘মশা পশুদের চেয়ে মানুষের গায়ে হুল ফোটাতে বেশি পছন্দ করে। এর কারণ মানুষের জিন ও গায়ের গন্ধ। মানুষের ত্বকে ‘সুলকাটন’ নামে এক ধরনের ক্যামিক্যাল থাকে, যা মশাকে আকর্ষণ করে।’ এ ছাড়া কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ও অক্টেনল নামের এক ধরনের কেমিক্যালের কারণেও মশার আক্রমণের শিকার হয় মানুষ। রামকুমার জানান, যেসব মানুষ ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়ে, যাদের ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেশি, গর্ভবতী নারী এবং যাদের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ তারাই মশাদের পছন্দের তালিকায় থাকে। এ ছাড়া যারা কড়া সুগন্ধি ব্যবহার করেন, বেশি ঘামেন এবং শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে তাদেরও হুল ফোটাতে পছন্দ করে মশা। তাই বলে যদি ভেবে থাকেন মশা শুধু মানুষকেই কামড়ায়, তাহলে ভুল করবেন।
দুবাইয়ে বন্যপ্রাণী ও চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. রেজা খান গালফ নিউজকে জানান, মশা মানুষ ছাড়াও প্রাণীদেরও কামড়ে থাকে। এই যেমন- ব্যাঙ। বিশেষজ্ঞরা শুধু মশার কামড়ানোর কারণই জানাননি, মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচার কয়েকটি উপায়ও জানিয়েছেন। রামকুমার জানান, মশা যে জায়গায় কামড়িয়েছে তা না চুলকানোই ভালো। কারণ, একবার চুলকালে বারবার চুলকাতে ইচ্ছে করবে। এর ফলে ইনফেকশন হতে পারে।
তিনি জানান, মশার কামড়ানোর জায়গাটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি জায়গাটি খুব চুলকায় ও ব্যথা করে তাহলে অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েডস ও অ্যানালজেসিক সমৃদ্ধ কোনো ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। তিনি আরো জানান, মশার কামড়ের ফলে অনেক সময় জ্বর হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের র‌্যাশও উঠতে পারে। তবে কোথাও বেড়াতে গেলে সেখানকার মশাবাহিত রোগগুলোও জেনে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মশা তাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়এখন এমন একটা আবহাওয়া, কখনও বৃষ্টি কখনও গরম। এই সময়টা গরমের প্রভাব অতিরিক্ত হয়ে থাকে। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিরক্তিকর উপদ্রব বাড়তে থাকে। এই বিরক্তিকর উপদ্রব হচ্ছে মশা। অতিরিক্ত গরম আর মশার যন্ত্রণার কারণে মশারির ভেতরে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
মশার স্প্রে, মশার কয়েল কোন কিছুতেই যেন কাজ হয় না। যদি এই দুটার একটাও শেষ হয়ে যায় তাহলে তোহ রক্ষা নাই। আপনার রাতের ঘুম হারাম। কিন্তু আপনি কি জানেন খুব সহজে এই মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আগেকার যুগে মশার কয়েল, স্প্রে তো কিছুই ছিল না। তখনকার মানুষ কিভাবে মশার হাত থেকে রক্ষা পেত? অবাক হলেও এটা সত্যি যে তারা প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়াত। ভাবচ্ছেন কিভাবে সম্ভব? তাহলে আজ জানাবো আপনাদের প্রাকৃতিক উপায়ে মশার হাত থেকে মুক্তি পাবার উপায়।
লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহারঃএকটি গোটা লেবু খণ্ড করে কেটে নিন। এরপর কাটা লেবুর ভেতরের অংশে অনেক গুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢুকাবেন শুধুমাত্র লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরা গুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিন। ব্যস, এতে বেশ কয়েকদিন মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
এই পদ্ধতিতে ঘরের মশা একেবারেই দূর হয়ে যাবে। আপনি চাইলে লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। এতে করে মশা ঘরেই ঢুকবে না।
কর্পূরের ব্যবহারঃমশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূরের ট্যাবলেট কিনে নিতে পারেন। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। আগের পানিটুকু ফেলে দিবেন না। এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।
রসুনের স্প্রেঃরসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকারী প্রাকৃতিক উপায়। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে করে যে কোন ধরণের রক্ত চোষারা আপনার ধারে কাছেও আসবেনা।
নিমের তেলের ব্যবহারঃনিমের মশা তাড়ানোর বিশেষ একটি গুণ রয়েছে। নিমের তেল ত্বকের জন্যও বেশ ভালো। তাই একসাথে দুটি উপকার পেতে ব্যবহার করতে পারেন নিমের তেল। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়বে না এবং সেই সাথে ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশন জনিত নানা সমস্যাও দূর হবে।
পুদিনার ব্যবহারঃজার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা মতে তুলসির মতো পুদিনা পাতারও রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশাই নয় পুদিনার গন্ধ অনেক ধরণের পোকামাকড়কে ঘর থেকে দূরে রাখে। পুদিনা পাতা ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানির ভাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।
জানেন কি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করবে মশা !যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এক ধরনের জেনেটিক্যালি মডিফাইড (জিএম) মশা উদ্ভাবন করেছেনঃ যা ম্যালেরিয়া সংক্রমণ প্রতিহত করতে পারে। মূলত, বিশেষ এক ধরনের মশার কামড়ে মানবদেহে ম্যালেরিয়া ছড়ায়। এই ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রতিরোধ করতে উদ্ভাবিত এই মশাই কার্যকর মাধ্যম হতে পারে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন এই মশার উদ্ভাবন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা যেসব মশা মানুষের দেহে ম্যালেরিয়া ছড়ায়, তাদের ডিএনএর মধ্যে এক ধরনের নতুন ‘প্রতিরোধমূলক’ জিন প্রবেশ করান।
তারা আশা করছেন, জিএম মশা অন্যর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে মিলিত হয়ে মশার জন্ম দিলে সেগুলোও ম্যালেরিয়া সংক্রমণ মুক্ত হতে পারে। আর এসব মশার কামড়ে মানুষের দেহে সংক্রমন প্রবেশ করবে না।
প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্বে ৩.২ বিলিয়ন মানুষ (প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা) ম্যালেরিয়া ঝুঁকিতে রয়েছে। মশারি, কীটনাশক, রেপেলেন্ট ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী মশার কামড় রোধে সাহায্য করে। সংক্রমণে আক্রান্তদের ওষুধও দেওয়া যেতে পারে। তারপরও প্রতিবছর এ রোগে বিশ্বে ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।
ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে নতুন উপায় খুঁজে বের করতে কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তাদের জিএম মশা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণূ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা ভারতের ‘অ্যানোফেলিস স্টেফেনসি’ নামক এক ধরনের মশার উপর গবেষণা চালাচ্ছেন
Share this article :

0 comments :

Contact Form

Name

Email *

Message *

 

About Author

Recent Comments