আমাদের পাড়ার মতিনের বৌ প্রচণ্ড অসুখী। অহর্নিশি সে সুখের পেছনে ছোটে। সুখের খোঁজে। সুখের আশায়। ফুল; সৌন্দর্য বিলায়, গন্ধ দান করে, মৌমাছি তা থেকে মধু আহরণ করে। এসব তার কাছে বিষয় নয়। সে ফুলের মত সুন্দর হতে চায়। পাখি; গান গায়, মানুষের মনে আনন্দ দান করে, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে, নিসর্গের ছবি হয়ে উঠে। তাতে তার কিছু এসে যায় না। সে ময়না বা টিয়ের মত দেখতে সুন্দর হতে চায়, মুক্ত আকাশে উড়তে চায়। সে চায় ঝর্ণা নদী বা সাগরের মত বয়ে চলতে, উচ্ছল হতে, কমনীয় হতে। কিন্তু উদার হতে কি? এই চাওয়া আর পাওয়ার মাঝে সুখ খোঁজে। এটাই তার কাংখিত সুখ পাখি। সে সুখ পাখিকে মনের খাঁচায় বন্দি করে আপন আত্মাকে পরিপূর্ণ করে রাখতে চায়। তাতে কার এলো বা গেল দেখার সময় নেই। শুধু অক্লান্ত পাখির পিছনে ছোটে; কিন্তু কেন যেন পাখিকে কিছুতেই ধরতে পারে না। যতই না পারে ততই অস্থিরতা বাড়ে। কিন্তু কেন? কেন সে অসুখী? সে কি আরও কিছু চায়? কিন্তু তার তো অভাব নেই। রূপ যৌবন অর্থ, সবই তার আছে। সে সুন্দরী, কিন্তু আরও সুন্দরী হতে চায়। সে তার নৌকোর মত চোখ, রংধনুর মত ভ্রæ, হাতে গড়া প্রতিমার মত মাজা-ঘসা দেহের ভাঁজ আর বাঁকগুলো আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে চায়। গরিব ঘরের ¯^ামীর ভাল চাকরির বদৌলতে ভাল আর্থিক অবস্থার আরও উন্নতি চায়। সুখী হতে এগুলো তার হিমালয়ের চূড়াকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার বাস্তবতায় বিভোর হতে চায়।
সবকিছু হাতের নাগালে এসেও যেন সব অধরাই থেকে যায়। তাই কোথায় যেন তার অতৃপ্তি। বোধহয় তাই সে অসুখি। আর এ সুখের জন্যে সে সব রকম ত্যাগ ¯^ীকার করতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে সে তার কলা-কৌশল, রূপ-যৌবন, আচার-আচরণ আর টাকা-পয়সা সব কিছুকে ষোল আনার বেলায় আঠারআনা কাজে লাগাতে প্রস্তুত। শুধু প্রস্তুতই নয়। কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে, পাঁচ পাঁচটি বছর ধরে। সে তার সেই আঠারআনাকে উসুল করে চব্বিশ ঘন্টা ধরে। সকালে ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে রাতে বিছানায় গিয়ে ঘুমান পর্যন্ত।
নিজের আকাংখাকে সে বিস্ফোরিত করে আপন ইচ্ছায়। তাতে কেউ অগ্নিদগ্ধ হলো বা পটল তুললো দেখার সময় নেই। এমন হাজার আকাংখার একটিকে টাইমবোমার মত সংসারের মাঝে ফেলে দিব্বি বসে বসে তামাসা দেখছে গত সাত দিন ধরে। বাড়ির কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে চাকর-বাকর সকলকে নির্ঘুম করে রেখেছে। আজ সন্ধ্যায় বিস্ফোরণ। নিজের সুখ সৃষ্টির উল্লাসে যে ধ্বংস হয় হোক ।
গত সাত দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কচি ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে তার দিন শুরু হচ্ছে। রূপচর্চার বিদেশি সামগ্রি, হাল ফ্যাসানের উপযোগি পোষাক, নিত্য নতুন গহনা তার ঠিক ঠিক চাই, আছেও। দাম্পত্য জীবন পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সন্তানের মা হতে চায়নি। পাছে ফিগার নষ্ট হবে। চুলোর পিঠে সে কখনও যায় না। এ সাত দিন তো প্রশ্নয় উঠে না। আগুনের আঁচে ত্বক ঝলসে লাবণ্যতা নষ্ট হবে। চাকর-বাকর ছাড়া সে বাড়িতে রান্না ধোয়া মোছা অসম্ভব হলেও, এই মহিলা এই সব নি¤œশ্রেনীর মানুষদের মানুষ বলে গন্য করে না। যাতে করে মাথায় উঠে কঁঠাল ভাঙ্গার সুযোগ না পায়। তাই সার্বক্ষণিক তীর্যক বাক্যবানে তাদের ধরাশায়ি করে রাখে। তাদের কাঁহাতোক সব কাজেই তার সুন্দর মুখ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। যদিও সে কিছুই বোঝে না সেটা তার সৌন্দর্যে কতটা নি¤œমুখি প্রভাব ফেলতে পারে।
সকাল আট’টা বাজে। বেড রুমের দরজায় কড়া নেড়ে বোয়া ডাকে, খালা, ও খালা, উডেন। আফনাগো কুডুম আইছে।
মতিনের বৌ ঠাস করে দরজা খোলে। কে এসেছে? তুমি জান না? আমি ন’টার আগে উঠি না। কাল রাতেই তো বলে রেখেছিলাম , আজ আমার প্রোগ্রাম আছে দশটার আগে ডেকো না।
আফনের মামী-শাশুরি আইছে, হের বড় বিপদ, হের ছুডোমায়াডা খুব অসুস্থ্য, হাসপাতালে ভর্তিক করুন লাগবো। হাত খালি, কিছু ট্যাকা চায়। হে ডরোইন রুমে বইয়া আছে। কী করুম খালা, কত্ত কইরা কইলাম, হুনলো না। খুব নাকি বিপ...
বোয়া, মুখে মুখে কথা বলবে না। তার সমস্যা আগে না আমারটা আগে? এ্যাঁহ? যাও বলো, দেখা হবে না। রাগে মতিনের বৌ এর মুখ ফুলে উঠে। গজগজ করে, যতসব ফকির-মিসকিনের দল। মিথ্যুক, সাত-সকালে বাহানা করে টাকা বাগানোর ফন্দি। চিৎকার দিয়ে বলে, বোয়া পানি গরম দিয়েছ? ডাব? ডাব রেডি কর। যাও, আর ওনাকে চলে যেতে বল। এখন দেখা হবে না। আর শোন, একটা হাফ বইল্ড ডিম, মাখন দিয়ে দুই ¯øাইচ পাউরুটি, খানিকটা ফ্রেন্স ফ্রাইট, দু’পিস চিকেন ফ্রাইট আর এক গ্লাস গরম দুধ, পরে এক মগ গরম কফি খাব। এর বেশি কুছুই খাব না। ডাক্তার বলেছে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। টিক দশটায় জিম করতে যাব।
পাড়া-প্রতিবেশী এবং আত্মীয়র সাথে তার সম্পর্কটা এমনই। গরিব অশিক্ষিতদের প্রকাশ্যে ঘৃণা করে। কথায় কথায় তাদের ছোটলোক, চামার, চাষা বলে গালাগার করে। তার বক্তব্য পরিস্কার ওদের মত আমি মিথ্যুক, লোভী আর চরিত্রহীন নই। ধনীদের কথা উঠলে হিংসায় মরে। তাদের চৌদ্দ নম্বর আয়-রোজগারের কথা বলে মিথ্যে শান্তনা খোঁজে। মধ্যবিত্তের উপর প্রভাব খাটিয়ে সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা। ¯^ামী পক্ষের দুঃসম্পর্কের আত্মীয় তো বটেই নিকটাত্মীয়রাও তার বাড়ি যেতে চায় না। সবাই ঘৃনা করে খানে-দজ্জালের মত ব্যবহার বলে। অবশ্য তার ভাষ্য ভিন্ন। তার মতে এসব আত্মীয়, আত্মীয় নয়, চান্ডাল। এরা ম্যানার জানে না। তবে তার নিজ বাবা-মা, ভাই-বোনদের বেলায় এই নিয়ম শিথিলই নয় অ¯^াভাবিকভাবে উল্টো।
আজ দুপুরে মতিনের বৌ পার্লার থেকে মাধুরি কাট করে আনা চুলে কন্ডিশোন করেছে। চুল সিল্কেরমত ফুরফুর করছে। দুপুরে ঘুমানোর চেষ্টা করেও নানা উত্তেজনায় ঘুম হল না। বিকালে ফেস স্টিমিং করছিল ত্বকের লাবণ্যতা বাড়ানোর জন্যে। সেসময় আর এক সুন্দরী প্রতিযোগী বাসায় এলো। মনে মনে মহাক্ষিপ্ত। আসার আর সময় পেল না। সৌজন্য কিছু কথা হল। তবে তার নিখুত সাজসজ্জা, আকর্ষনীয় চেহারা দেখে সে মনে মনে হিংসায় জ্বলে মরছিল। খুব বিরক্ত হচ্ছিল। আড়ালে যেয়ে এক ফাঁকে ঠোঁটের এক কোনা বাঁকা করে নিঃশাসের সাথে নাকের ভিতর থেকে শব্দ করে, হুঃ। ভেংচি কেটে ক্ষুত বের করে বলে আপনার নাকটা বোঁচা, তা কী খেয়াল করেছেন? ভদ্রমহিলা শুধু বলেছিল, আল্লাহ্র দান, কী আর করা। তো ঠিক আছে সন্ধায় দেখা হবে।
advertisement
লেখাপড়া জানা এই মহিলা ঘষে মেজে ইন্টারমিডিয়েট। তাতে তার মাটিতে পা পড়ে না। তার ইংরেজি বলার জন্যে পেটে বোমা মারার দরকার হয় না। তবে হাই হ্যালো বাট সো হোয়াট সরি-র বাইরে যেতে পারে না। এগুলো সে বাক্যের আগে মাঝে বা শেষে হর হামেশা ব্যবহার করে। চাল-চলন, হাব-ভাবে নিজেকে হাই সোসাইটির একজন সদস্যা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা সর্বদায় লক্ষ্য করা যায় এবং নিজেকে পরিচয় দেয়, আমি মিস জেরিন। যাদও প্রকৃত নাম জরিনা বেগম।
অথচ আমাদের মতিন কী ভেড়ার ভেড়া। ছাগল বা গরুও। গরিব মানুষের ছেলে। হালে ¯^ল্প বেতনের মোটা উপরি পাওয়া চাকরির জোরেই মনে যেটুকু জোর। ওই বা কী করবে। ওর এমন বড় তোরের গলা নয় যে এর প্রতিবাদ করবে। বুকের পাটা এমন চওড়া নয় যে এগুলো প্রতিহত করবে। ঘারের উপর কটা মাথা যে বিদ্রোহ করবে? দূর্বল ব্যক্তিত্বের কারণে মতিন মানুষ হয়েও মেরুদণ্ডহীন প্রাণী কেঁচোর মত জীবন যাপন করে। পক্ষান্তরে অহংকারী গৃহবধূ উচ্চাভিলাসী নীতির কারণে বিষধর সাপ হায়ে মতিনের সংসার নীল দংশনে জর্জরিত করে যাচ্ছে। শুধুমাত্র বৌয়ের কারণে মতিন মিত্রহীন, অর্থহীন, ভেগাবণ্ডে পরিণত হয়েছে।
সবখানেই জেরিনের হস্তক্ষেপ, খবরদারি। সবকিছুই তার নিয়ন্ত্রনে। যা চায় তাই পায়। টাকা চাই তো, টাকা। ক্ষমতা চাই তো, ক্ষমতা। ¯^ীকৃতি চাই তো, তাই। তার পরও তার খাই খাই ভাব। পেট ভরে তো মন ভরে না, মন ভরে তো চোখ ভরে না। আরও চাই। তবুও তার মনে সুখ নাই। সে সুখী হতে চায়। আরও সুখী।
আজ বিকাল থেকেই তার মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে। প্রধান কারণ সকালেই গেস্ট, বিকালে ঘুমহয়নি। দ্বিতীয় কারণ ঔ প্রতিযোগিনী। তৃতীয়ত মতিন বায়না ধরেছে বিউটি কনটেস্টে যাবে কিন্তু সে তাকে নেবে না। কেননা মতিন কার্টেসি জানে না। সে তার ছোট বোনকে নিয়ে এসেছে, তার সাথে যাবে। ঘুম না হওয়ায় চোখ লাল হয়ে আছে। মুখটা বিশ্রিরকমের ফুলে আছে। রাগে ক্ষোভে তার অনুষ্ঠানেই যেতে ইচ্ছে করছে না। যত ঝামেলা আজই হতে শুরু করলো। অথচ আজ কিনা তার জীবন-মরণের এসিড টেস্ট।
কিন্তু মিস জেরিনের ধারণা, সে এটেণ্ড করলেই সুনিশ্চিৎ চাম্পিয়ন। কে আছে তার ধারে কাছে? কেউ নেই। অতএব সব সমস্যাকে ফুতকারে উড়িয়ে দিয়ে বুক ফুলিয়ে অনুষ্ঠানে গেল। একটুপর সন্ধ্যায় শহরে এক ব্যতিক্রমধর্মী বিউটি কনটেস্ট শরু হবে। ‘মিস সিটি বিউটি কনটেস্ট’। আকর্ষণীয় পুরস্কার। আমাদের মতিনের বৌ অংশ গ্রহন করবে বলে গত সাত দিন তার নাভিশ্বাস উঠেছে। সে মিস সিটি হলে তার সুখের আর একমাত্রা যোগ হবে।
প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সমাজের উচ্চ-বিত্ত ক্ষমতাবানরা এবং নামি-দামি তারকারা উপস্থিত। বিখ্যাত ব্যাক্তিত্বরা বিচরক মণ্ডলী। সে চাম্পিয়ন হবে, গন্যমান্যদের হাত থেকে ট্রফি নেবে, সমাজে নাম ফুটে ঊঠবে, ভাবতেই তার মাঝে মাঝে বুকের ভিতর বলক দিতে থাকে। প্রতিযোগীতার শেষ দিকে তাকে খুব উৎসাহিত মনে হল।
এবার ফলাফল ঘোষণার পালা। একে একে তৃতীয়, দ্বিতীয়, দ্বিতীয় রানার-আপ এবং প্রথম রানার-আপ এর নাম ঘোসণা করা হলো। মিস জেরিন খুব হাসি-খুশি, ফুরফুরে মেজাজে আছে। সে ধরেই নিয়েছে এতক্ষণ যেহেতু তার নাম ঘোষণায় আসেনি; এবার তার নাম আসবে মিস সিটি হিসেবে। কিন্তু মিস জেরিনের নাম আসে না। মিস সিটি হলো সেই বিকেলের ক্ষুতঅলা মেয়েটি। শোকে-দুঃখে মিস জেরিন মূর্ছিতা গেল। এক সময় জানা গেলো সে ষোলজনের মধ্যে পনেরতম হয়েছে। কেউ কেউ টিজ করলো, ভাগ্যিস ষোলতম হননি। সে জ্ঞান ফিরে পাবার পর নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান তাকে শান্তনা দিতে লাগলেন, মিস! কনটেস্ট যেমন তেমন আপনার এস এম এস স্কোর নি¤œ পর্যায়ে। শুভাকাংখীরা আপনার পক্ষে কোন ভোটই করেনি। লেগে থাকুন। পরেরবার চেষ্টা করুন।
যাই হোক সেদিন প্রায় রাত বারটার দিকে ব্যর্থ মিস সিটি তার নিজ বোনের সাথে ভাঙা মন নিয়ে রিক্সাযোগে বাড়ি ফিরছিলো। পথিমধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট থাকায় ছিনতাইকারীর হাতে পড়লো। তারা গান পয়েন্টে মিস জেরিনের গহনাপত্র হাতিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে তাকে নামিয়ে নিতে যাবে এমন সময় পুলিশের বাঁশির শব্দে পেয়ে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে গেল।
অবশেষে মান-সম্মান, গহনাগাটি সবকিছু খুইয়ে বাসায় পৌঁছল। সবকিছু শুনে মতিন কোন মন্তব্য না করে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু কিছুতেই মিস জেরিনের ঘুম আসছিল না। প্রচন্ড মাথা ব্যথা। বুকের ধরফরানি ভয়াবহভাবে বেড়েছে। সে শুধু এপাশ ওপাশ করতে লাগলো। এমনটা নতুন কিছু নয়। প্রায়ই তার এমন হয়। মাইগ্রেইন আছে। সে দুটো নাপা-এক্সট্রা ও একটা ডরমিকাম খেয়ে ফের বিছানায় গেল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। তার অস্থিরতা বেড়েই চললো।
তখন খোলা জনালা দিয়ে একাদশির জোসনা এসে মতিনের সরল ¯^াভাবিক শান্ত মুখকে আরও সুন্দর ও নিশ্চিন্ত করে তুলছিল। তার নাক ডাকার মিহি শব্দে জেরিন তাকে লক্ষ্য করলো। মনে হল জোসনার নরম আলোর সাথে পাল্লা দিয়ে মতিনও নরম রূপালী হাসি হাসছে। সে বিরক্ত হয়ে কনুই দিয়ে ঘুতো মেরে জাগিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, হাসছো কেন?
মতিন তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে শুধু তুলতুলে পাতলা হাসি দিয়ে বললো, কই? নাহ, তেমন কিছু না। এই একটা ¯^প্ন দেখছিলাম আরকি।
ব্যর্থ মিস সিটি অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বললো, সত্যিকরে বল, কী দেখছিলে, নিশ্চয় কোন বড় লটারীর পুরস্কার পেয়েছ!
না, না। একটা পাখি মানে পায়রা, আরে শান্তির পায়রার সাথে হঠাৎ বন্ধুত্ব হয়ে গেল। তার সাথে ঐ মেঘমুক্ত ধূসর আকাশে জোসনায় সাঁতার কাটছিলাম, মানে উড়ছিলাম।
এবার বাজখাঁই আওয়াজ হলো, ভন্ডামী রাখ, তুমি হাসছিলে কেন, তাই বল।
জোসনার মত হাসি দিয়ে মতিন বললো, পায়রাটা বলছিল কী, ‘যে আত্মা সর্বদা অতৃপ্ত বা অপূর্ণ থাকে সুখ পাখি সেখানে বাস করে না’।