Some Important Website

বাংলা প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট সমুহ

Saturday, October 22, 2016

৫৩।ফাইজলামি করস?



আপনি করে ডাকবি।কাছে ঘেষার চেষ্টা
করবিনা কখনো।
কারণ বউছিলো পুরাই কয়লার ড্রাম।কুচকুচে
কালো তার গায়ের রং।বাসরঘরে ঢুকে
বিছানায় তাকিয়ে দেখি যেন ঠিক
একটা কালো কুকুর বসে আছে লাল ঘোমটা
দিয়ে।ঠোঁটে লাল লিপস্টিক,কপালে
ঢ্যামা একটা টিপ।
ওয়াক থু, কি বিচ্ছিরি সাজ।লাল কালোয়
কি এক অগোছালো সাজ।বাতি বন্ধ
করতেই বুঝলাম যেন একটা আধার নিয়ে
শুয়ে আছি।
নেহাৎ যৌনতার দায় সারা হয়েছিল সে
রাতে।
তারপর বিছানা থেকে তুলে
দিয়েছিলাম তাকে।
,
যৌতুক বিরোধী ছিলাম আমরা।তাই
বাবার বক্তব্য ছিলো বিনা যৌতুকে
নিজের আত্মীয়ের কারো মেয়েকে
পুত্রবধু করে আনবেন।
তাইহল।হাজারো অনিচ্ছা স্বত্তেও
বাবার গরিব বন্ধুর কালো মেয়েকে বিয়ে
করতে হল আমায়।
কলেজের সেলফি বয়ের এমন একট বউ
জুটলো, যে জীবনে বউকে নিয়ে আর
সেলফি তোলা যাবেনা।বন্ধুরা অনুরোধ
করত বউ নিয়ে বেড়াতে আসতে।কিন্তু
আমি তাকে নিতামনা।লজ্জা আছে তো
নাকি।
রাতে বাড়ি ফিরতাম দেরি করে।তখনো
সে জেগে থাকত।খাবার বেড়ে দিত।
কথা বলতামনা আমি।কিভাবে
বলি,বারে, ডিস্কোতে সুন্দরী মেয়ে
দেখে বাড়িতে কি অমন আলকাতরা
ভালোলাগে?ওর কি প্রয়োজন সেটা
কোনদিন জিজ্ঞেস করিনি।বাড়িতে
সবার কাপড় কেনাহত,খাবার তো আছেই।
আর কি চাই? এভাবেই কেটে গেল
কয়েকমাস।
,
সেদিন একবন্ধু তার গার্লফ্রেন্ডকে গিফট
দেয়ার জন্য কিছু কিনেছিল।সেটা
আমাকেই পৌছে দিতেহবে।অনেকরাত
ে গিফট বক্স নিয়ে বাড়ি ফিরলাম
আমি।দেখলাম সে সোফায় ঘুমিয়ে
গেছে।ভাবলাম খেয়েছে তো?আমি না
আসা পর্যন্ত আবার ওকে খেতে দেখিনি
কোনদিন।
শুয়ে পরলাম।কিন্তু মনটা বড় খচখচ করছে।
ডেকে তুলে বললাম,খেয়ে তারপর শুবি।
পরদিন সকালে গিফট বক্স খুজে দেখি
ওটা আর আস্তনেই।ও ওটা খুলে ভিতরে যা
ছিল ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে।ওর
খুশি মুখ দেখে কিছু বললামনা।বেচারী।
কালো বলে কি সাজতে নেই?নিজেই
হেসেছিলাম সেদিন।
তারপর নতুন করে গিফট সাজিয়ে পৌছে
দিলাম আমি।
তারপর একদিন ও বমি করলে বুঝলাম ও মা
হতে চলেছে।
,
এক শীতের বিকেলে বাবা মা বেড়াতে
গেলেন গ্রামে।বাসায় রইলাম আমি আর
সে।
সে রাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরলাম।
কারণ বাড়ি পুরো একা।গ্রাম্য মেয়ে।
বলা যায়না ভুতের ভয়টয় পায়নাকি।
বাসায় ফিরে শুনলাম রান্না হয়নি।কারণ
জানতে চাইলে ও বলল,ভেবেছিলাম
আপনি বন্ধুদের সাথে খাবেন।দুপুরের কিছু
ভাত ছিল।আমার হয়েযাবে।তাই,,,
ফ্রিজ খুলে দেখলাম।সামান্যই ভাত।
বললাম চল্, কাপড় পরে নে। হোটেলে
খাবি।
ও যেতে চাইলনা।আমিও রেখে যেতে
পারছিনা একা বাড়ি বলে।
অবশেষে দুজনে বাহির হলাম।রাতের শহর
ও যেন হা হয়ে দেখছিল।বললাম হাত
ধর,নাহলে ভীড়ে আবার হারিয়ে যাবি।
সেদিন প্রথম ও আমার সাথে
বেড়িয়েছিলো,প্রথম আমার হাত
ধরেছিল।
মন্দ না।আমিও ওর আঙুল ধরেছিলাম যাতে
ও হারিয়ে না যায়!!
হোটেলে আমাকে আপনি করে
বলবিনা,তুমি করে বলবি আচ্ছা?
মাথা নাড়ল ও।
কিন্তু হোটেলে খাবার সময় ও একবারো
আমায় ডাকেনি।উল্টো আমিই
বলেছিলাম,তুমি আরো কিছু খাবে!!!
,
সেদিন দেখি স্নোর টিউব কেটে স্নো
বাহির করছে।রেগে বললাম,স্নো ফুরিয়ে
গেছে বলতে পারোনা?
সেদিনই সে প্রথম আমার কাছে শ্যাম্পু
চেয়েছিল।
আমি সেদিন ওকে নিয়ে মার্কেটে
গেলাম কসমেটিকস কিনতে।
বন্ধুরা অনেকেই দেখেছিল সেদিন কিন্তু
সবাই ভাবি বলে যথেষ্ঠ রেসপেক্ট
করেছিল।সবাই তিনদিন পর আড্ডাতে
আসার জন্য অনুরোধ করছিলো ওকে।
তিনদিন পর আমিই ওকে
নিয়েগিয়েছিলাম মোটর সাইকেলে।ওর
জীবনের প্রথম লংড্রাইভ আর ড্রাইভার
ছিলাম আমি।আর আমার বউকে নিয়ে
প্রথম।
,
জীবনের প্রথম ওরজন্য আজ খোদার
দরবারে হাত তুলেছি আমি।ও যেন সুস্থ
থাকে।কারণ আজ ও মা হবে।আমি বাবা
হব।
জানিনা কোথাথেকে আজ এতো কান্না
আসছিল আমার।হাসপাতালে ওরকাছে
বারবার ছুটে যাচ্ছিলাম।ও হাতধরে
যতবার বলেছিলো ওর খুব ভয়
করছে,ততবারই বলেছি ভয় পেওনা আমি
আছি।
সেদিন ও কাউকে খুজেনি শুধু আমায়
খুজেছে।আমায় পাশে থাকতে বলেছে
বারবার।
আর আমি,বারবার পর্দার ফাকে বারবার
ওকে দেখলাম।
সিজারে নেওয়া হয়েছিলো ওকে।
সন্তান পেলাম।কিন্তু ওকে পেলামনা।
ওর দেহটা ধরে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম।মনে
হচ্ছিলো খুব যেন নিজের কলিজাটা
ছিড়েগেছে।
আজো ওর কবরের পাশে ছুটেযাই।চিৎকার
করেরে বলি,ফিরে এসো তুমি,একটা রাত
তোমারসাথে গল্প করা বাকিছিলো, একটা
সেলফি
তোমায় নিয়ে তোলার ছিল।জানি
ওকে ভালবাসা দিতে পারিনি।কিন্তু
আজ বুঝছি কেন এখনো বুকের বামপাশটা
চিনচিন করে ব্যাথা করে।
.
- সংগ্রহীত
Share this article :

0 comments :

Contact Form

Name

Email *

Message *

 

About Author

Recent Comments